প্রকাশিত: Thu, Feb 15, 2024 11:46 AM
আপডেট: Wed, Jun 25, 2025 9:18 PM

সংসদের ৪৮ নারী আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী

[১]মনোনয়নের প্রার্থী সংখ্যাই প্রমাণ করে নারী জাগরণ ঘটেছে [২]আওয়ামী লীগ বারবার ক্ষমতায় আসবে এটা কেউ ভাবতে পারেনি: প্রধানমন্ত্রী

ইকবাল খান: [৩] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিটি সেক্টরে নারীদের সফল অংশগ্রহণে বাংলাদেশের নারী অগ্রযাত্রায় নবজাগরণ ঘটেছে। তিনি বলেন, ‘নারীদের অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই কারণ নারীরা গ্রামীণ পর্যায়েও প্রতিটি সেক্টরে এগিয়ে যাচ্ছে।’

[৪] বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে এক সভায় দেওয়া ভাষণে একথা বলেন।

[৫] প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদে ৪৮টি সংরক্ষিত আসনে ১৫৫৩ জন নারী আবেদন করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি প্রমাণ করেছে যে বাংলাদেশে নারী উন্নয়নে একটি নবজাগরণ ঘটেছে।’ 

[৬] প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েকশ’র মধ্যে ৪৮ জন নারীকে খুঁজে বের করা তাঁদের জন্য কঠিন কাজ। তবে মনোনয়ন না পেলে হতাশ না হয়ে দেশ ও জনগণের জন্য মাতৃস্নেহে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, আমি নিজেও মাতৃস্নেহে দেশ গড়তে চাই।

[৭] প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী একজন নারী বিবি খাদিজা (রাঃ) এবং মেয়েরা মায়ের জাতি সেটাও মনে রাখতে হবে। কাজেই মেয়েদের অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই, এ ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সচেতন।  

[৮] ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর দীর্ঘদিন নির্বাসিত জীবন শেষে ১৯৮১ সালে দেশের ফেরার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে ফিরে আমি পেয়েছিলাম সারি সারি কবর। সেই কবরের মাটি ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে পারে না। এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে দিবো না। আমার যাত্রাপথ এত সহজ ছিল না। নানা রকম ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত চলছিল, এখনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত আছে। 

[৯] আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিশাল জনসভায় আমি বলেছিলাম, বাংলাদেশের জনগণই আমার পরিবার। এই বাংলাদেশের জনগণই আমার আপন জন। তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যেভাবে আমার বাবা তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। যেভাবে আমার মা, আমার ভাইয়েরা জীবন দিয়ে গেছেন আমিও আমার বুকের রক্ত ঢেলে দিবো এই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য।

[১০] তাঁর চলার পথে পথে প্রতি পদে বাধার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার একমাত্র শক্তি হলো মানুষের সমর্থন ও মানুষের অনুপ্রেরণা। সেজন্য মানুষের জন্যই তার কাজ করা। ওরা ভেবেছিল রাসেলকে পর্যন্ত হত্যা করেছিল এজন্য যে বঙ্গবন্ধুর রক্তের কেউ যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে। জানিনা আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছিলেন বারবার মৃত্যুকে মুখোমুখি দেখেছি কখনো গুলি, কখনো বোমা, কখনো গ্রেনেড হামলা এসব কিছুই আমাকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। আমার দলের নেতাকর্মীরা মানব ঢাল রচনা করে বারবার আমাকে রক্ষা করেছে। অনেকে জীবন দিয়ে গেছেন। তাদের সব সময় আমি স্মরণ করি।

[১১] আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

[১২] প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত চড়াই উতরাই পার হয়ে আজকের বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগ বারবার ক্ষমতায় আসবে এটা কখনো কেউ ভাবতে পারেনি। ৯৬ থেকে ২০০১ এবং এরপর ২০০৮ এর নির্বাচনের পর বারবার জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। ২০০৯ এ  তিনি যখন সরকার গঠন করেন তখন একটি বিধ্বস্ত অর্থনীতি, বিপর্যস্ত সমাজ ও বিশৃঙ্খল অবস্থা ছিল। সেগুলো কাটিয়ে উঠেই আমাদের উন্নয়নের পথ চলা।

[১৩] আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সুনির্দিষ্ট আদর্শ লক্ষ্য নিয়ে চললে পরে যে কোন অভীষ্ট লক্ষ্য যে অর্জন করা যায় আমরা সেটা প্রমাণ করেছি। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। 

[১৪] তিনি এ সময় গণভবনে আগতদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আজি বসন্ত আমার গণভবনের বাগান ফুলে ফুলে শোভিত।  

সালেহ্ বিপ্লব: [২] রেজিয়া ইসলাম: পঞ্চগড়, দ্রৌপদী বেবি আগরওয়াল: ঠাকুরগাঁও, আশিকা সুলতানা: নীলফামারী, রোকেয়া সুলতানা: জয়পুরহাট, কোহেলী কুদ্দুস: নাটোর, জারা জাবীন মাহবুব: চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রুনু রেজা: খুলনা, ফরিদা আক্তার বানু: বাগেরহাট, ফারজানা সুমি: বরগুনা, খালেদা বাহার: ভোলা, নাজনীন নাহার রশীদ: পটুয়াখালী, ফরিদা ইয়াসমিন: নরসিংদী, উম্মে ফারজানা ছাত্তার: ময়মনসিংহ, নাদিয়া বিনতে আমিন: নেত্রকোনা, মাহফুজা সুলতানা: জয়পুরহাট, পারভীন জামান: ঝিনাইদহ, আরমা দত্ত: কুমিল্লা, লায়লা পারভীন: সাতক্ষীরা, মন্নুজান সুফিয়ান: খুলনা, বেদৌরা আহমেদ সালাম: গোপালগঞ্জ, শবনম জাহান: ঢাকা, পারুল আক্তার: ঢাকা, সাবেরা বেগম: ঢাকা, শাম্মী আহমেদ: বরিশাল, নাহিদ ইজাহার খান: ঢাকা, ঝর্না হাসান: ফরিদপুর, ফজিলাতুন নেসা: মুন্সিগঞ্জ, সাহিদা তারেক: ঢাকা, অনিমা মুক্তি গোমেজ: ঢাকা, শেখ আনার কলি: ঢাকা, মাসুদা সিদ্দিক রোজী: নরসিংদী, তারানা হালিম: টাঙ্গাইল, বেগম শামসুন নাহার: টাঙ্গাইল, মেহের আফরোজ চুমকি: গাজীপুর, অপরাজিতা হক: টাঙ্গাইল, হাছিনা বারী চৌধুরী: ঢাকা, নাজমা আকতার: গোপালগঞ্জ, রুমা চক্রবর্তী: সিলেট, ফরিদুন্নাহার লাইলী: লক্ষ্মীপুর, আশ্রাফুন নেছা: লক্ষ্মীপুর, কানন আরা বেগম: নোয়াখালী, শামীমা হারুন: চট্টগ্রাম, ফরিদা খানম: নোয়াখালী, দিলোয়ারা ইউসুফ: চট্টগ্রাম, ওয়াসিকা আয়েশা খান: চট্টগ্রাম, জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা: রাঙামাটি, সানজিদা খানম: ঢাকা, মোছা. নাসিমা জামান: রংপুর

[৩] বুধবার বিকেলে গণভবনে এই তালিকা ঘোষণা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৪ দলের অনুরোধে নোয়াখালী থেকে কানন আরা বেগমের নাম বিবেচনা করা হয়েছে। আর একটি আসন গণতন্ত্রী পার্টিকে দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে।

[৪] গণভবনে বুধবার দুপুরে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এ মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

[৫] মোট ১ হাজার ৫৫৩ প্রার্থী এবার মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন।